টপিকঃ প্রথম ভালো লাগার গল্প (প্রেম বিষয়ক)।
আমি আমার প্রথম কোন মেয়েকে ভাল লাগার গল্পটা বলছি। আপনাদেরটাও শেয়ার করবেন আশা করি। আর অনুরোধ টপিকটি কুমিরে খাওয়া গল্পের মত না হয়।
---------------------------------------------------------------------
ক্লাস সেভেন এর কথা। তখন ধোলাইপাড়ে "উদয়ন কিন্ডার গার্টেন" নামক স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম (ক্লাস সিক্সে)। ছাত্র-ছাত্রী বেশি ছিল না। ক্লাস সিক্সে ভর্তি হওয়ার সময় রোল ছিল ৪৮ (সবার শেষ বা দুই একজন আগে)। সেভেনে উঠে সেটা সম্ভবত ১/২ (মনে নেই:rolleyes:) হয়েছিল। তাই সব শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে সমর্থ হয়েছিলাম যা পরবর্তীতে আমার ভাল লাগার বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল।
সেভেনে যখন উঠি তখন ক্লাস সিক্সে একটা নতুন ছাত্রী আসে যার নাম মুনমুন (উঁহু.......বাংলার সিনেমার গন্ধ আসছে)। অসাধারণ সুন্দরী মেয়েটি। স্কুলের সবচেয়ে সুন্দরী হওয়ায় সকলের দৃষ্টিই তার দিকে। হঠাৎ একদিন বোধ করলাম আমারও তাকে ভাল লাগে। কিন্তু ততদিনেই তার পেছনে বিশাল লাইন। কিন্তু সেভাবে তাকে প্রপোজ করার ইচ্ছা ছিল না। আর প্রেম বলতে আসলে তখন কি বুঝতাম জানি না। কিন্তু আমি তাকে বললে আর এটা শিক্ষকরা সবাই জানলে খবর আছে সেটা ভাবলেই আর কিছু মনে থাকত না। তার উপর সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন চরম রগচটা। তাকে কখনও হাসতে দেখেছি কিনা মনে নেই।
একদিন আমাদের স্কুলের বুয়াকে বিষয়টি জানালে তিনি বললেন "...একটা মেয়েকে এতজনে পছন্দ করলে চলে?":mad:।
আমার মাথায় খেলছিল কিভাবে তাকে একটা ফুল দেয়া যায়। রাস্তা ঘাটে তো আর ফুল দেয়া যায় না! তাই অন্য কিছু চিন্তা করছিলাম। একদিন মাথায় আইডিয়া আসল একটা কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করব। পুরষ্কার হিসেবে দেব ফুল। কিন্তু তারা হেরে গেলে তো সব মাঠে মারা। তাই সিন্ধান্ত নিলাম সবাইকেই পুরষ্কার হিসেবে ফুল দেয়া হবে; হারলেও, জিতলেও।
সব ঠিক ঠাক। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাহায্যে তা আয়োজন করলাম। তিনিই প্রশ্ন করছিলেন। কিন্তু দু:খের বিষয় হেরে যাওয়ার ভয়েই ওদের ক্লাসের কেউ আসে নি~X(।
প্রথম চেষ্টা ব্যর্থ। এরপর অন্য চেষ্টা।
ওদের বাড়ির পাশেই থাকত আমার এক বন্ধু। তার পরামর্শে বিকাল বেলা ঘুড়ি উড়াতে যেতাম ওদের এলাকায়। মুনমুনদের পাশের বাড়ির ছাদে বসেই উড়াতাম ঘুড়ি। এভাবে দিনের পর দিন উড়াতে উড়াতে ওর ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক হয়ে গেল। এক পর্যায়ে ওদের বাড়ির ছাদেই ঘুড়ি ওড়াতাম। প্রতিদিন বিকালে দেখতাম তাকে।
একদিন দেখলাম সে একটা পাঞ্চাবী পরে এসেছে। খুব বেশি পাতলা নয় আবার খুব ভারিও নয়। মোটামুটি ভিতরের জামা (সম্ভবত শেমিজ, তখন অবশ্য ওটা নাম জানতাম না) দেখা যাচ্ছিল। আমি তো লজ্জায় শেষ:P। যতক্ষন ছিলাম ওকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করতাম অন্য মানুষদের দৃষ্টি থেকে=)) (যে নিজেই দেখাতে চায় তাকে কি আড়াল করা সম্ভব?)। এই কথা মনে পড়লে এখনো হাসি পায়:D।
এভাবে একসময় ৭ম শ্রেণী শেষ হয়। এরপর ৮ম শ্রেণীতে ভর্তি হলাম এ.কে. হাই স্কুলে। স্কুলটি ওদের বাড়ি পার হয়েও অনেক দুরে। মেইন রাস্তা দিয়ে গেলে ততটা দুরে নয়। কিন্তু আমি প্রতিদিন ওদের বাড়ির সামনে দিয়েই যেতাম ও আসতাম। সবাই দলবেধে মেইনরোড দিয়ে গেলেও আমি যেতাম একা। একদিন আগের স্কুলের এক ম্যাডামের সাথে দেখা হলে তিনি বললেন, "তুমি এখান দিয়ে এত ঘুরে যাও কেন?" আমি কিছু না বুঝে বললাম "মেইন রাস্তা দিয়ে যেতে আমার ভয় করে:rolleyes:"। ম্যাডাম হেসে বললেন "ছেলে মানুষের একি কথা?"[-X।
এভাবে প্রায়ই স্কুল থেকে ফেরার পথে দেখতাম তাকে তাদের বাড়ির দরজায় দাড়িয়ে থাকতে। কে যানে, সেও হয়তো বুঝত অথবা অন্য কারও জন্য দাঁড়িয়ে থাকত!
ধীরে ধীরে তাকে আর আগের মত দেখতাম না। শুনলাম এলাকার ছেলে পেলে খুব জালাতন করে। একটা সময় আর মোটেই দেখতাম না। কিন্তু ঐ বয়সে সেটা নিয়ে আর ঘাঁটার মত সাহস ছিল না। শুনলাম, ওকে নাকি কোন মাদ্রাসায় না যেন অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
এভাবেই তো দিন কেটে গেল। ক্লাস নাইনে আমরা ধোলাইপাড় ছেড়ে মোহাম্মদপুরে চলে আসি। এরপর আর কিছু জানি না।
তার চেহারার কিছুটা অস্পষ্ট ভাব আমার এখনও মনে আছে।
সবাইকে ধন্যবাদ।
what to do?