তপু লিখেছেন:তবে এরা যে ইংরেজি শিখে না ও বলে না ঠিক তা নয়। যেখানে কেবলই ইংরেজি প্রয়োজন, সেখানেই কেবল ইংরেজি বলে।
এক্সাক্টলি, তাদের মত এত উন্নত একটি দেশও ইংরেজী বরন করতে বাধ্য হচ্ছে, আর আমাদের মত অনুন্নত, শিক্ষায় পশ্চাদপদ একটি দেশ কেন নয় ?
আমার যদিও ইংলিশ মিডিয়ামের প্রতি কোন বিরুপ মনোভাব নাই, তবু আমি সেভারসেরএই কথার সাথে একমত।
সেভারাস লিখেছেন:বর্তমান সময়ে ইংরেজী জ্ঞান ছাড়া কিছুই চলবে না এটা জানা কথা। তাই তো আমাদের দেশে এখন ইংরেজী শিক্ষার উপরে অনেক জোর দেয়া হয়। জোর দিবেই বা না কেন? এখন যার ইংরেজী জ্ঞান যত ভালো তার ভবিষ্যত তত উজ্জ্বল।
এটা ঠিক ইংরেজী জ্ঞান ছাড়া কিছুই চলবে না এটা হয়ত অনেক ক্ষেত্রে নাও ঠিক হতে পারে। কিন্তু শিক্ষার ক্ষেত্রে আমি মনে করি এটা ঠিক। জানি জাপান, জার্মানী, নরডিক দেশের মত কিছু দেশে ইংরেজী বাদেও শিক্ষা হয়। কিন্তু দেখুন সবচাইতে রিচ রীসার্চ রিসোর্স কিন্তু ইংরেজীতে!
উচ্চ শিক্ষায় আমার মতে বিজ্ঞানে অন্তত পুরোপুরি ইংরেজী হওয়া উচিৎ। আমি বাংলায় পড়লাম চলক, বিএসসি তে এসে পড়ছই ভেরিয়েবল, বাংলায় পড়লাম লম্ব, এখন খুজি হাইপোটেনিয়াস কি ... ছোট্ট অনেক উদাহরন আছে এমন যা হোচট খাওয়ায়।
জাপান অনেক উন্নত কেবল তাদের ভাষার প্রতি টানের জন্য না, তাদের পরিশ্রম, পরিচালনার অবদান কিন্তু অনেক। বাংলাকেই কেবল তখনই শিক্ষার প্রধান মাধ্যম বানানো উচিৎ যখন আমরা ওই পর্যায়ে যাব। এখন যদি আমরা ইংরেজী বর্জন করি কিভাবে উন্নতি করব ? শিখব ?
ধরুন আমরা কম্পিউটারসায়েন্সে উন্নতি করতে চাই। কিভাবে করব ? উচ্চ শিক্ষা নিতে হবে। কোন ভাষায় ? জাপানী, ফ্রেন্চ, জার্মানী ... না ইংরেজী ?নাকি বাংলা ?
আমাদের দেশে জাপানী,ফ্রেন্চ বা অন্য ভাষার বই নাই বল্লেই চলে।এটাই বাস্তবতা। আছে কেবল ইংরেজী। সুতরাং আমি যদি ইংরেজীতে দক্ষ না হই কিভাবে শিখব ?
বলতে পারেন আমাদের এই ধারা থেকে বের হতে হবে। অন্য ভাষাতেও এগোতে পারি আস্তে আস্তে। ঠিক আছে তাহলে আমি বাংলার পাশাপাশি ইংরেজীকেই বেছে নিব।
কেন ? আমি উচ্চতর শিক্ষা নিতে বাইরে যেতে চাই।খোজ নিয়ে দেখলাম রান্কিং এ প্রথম দিকের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজী ভাষী দেশে। প্রায় ৯৯ ভাগই চায় টোয়েফল বা আইইএলটিএস। তাহলে ইংরেজী শিখে আমার সুযোগ বেড়ে যাচ্ছে।
আবারও বলা যেতে পারে, ইংরেজী বই গুলোর বাংলায় অনুবাদকরে দিলে অনেকের বুঝতে সুবিধা হত। কিন্তু যারা অনুবাদ করবেন তাদেরও তো ইংরেজী জানতে হবে ! আর অনুবাদ করা বই পড়ে আমি কিন্তু " ওহে দুনিয়া" লিখবা না, লিখব "Hello world !", তাও ইংরেজীতে কোড করে। তাই, যদি আমি এই ভাষাটা ভালো করে জানি তাহলে আমার লিখতে সুবিধাই হবে, অন্তত অসুবিধা নয়, যেমন চলক মানে ভেরিয়েবল তা আবার আমাকে রি-ট্রান্সলেট করা লাগবে না।
আমার মনে হয়, আজকালকার শিক্ষার যেকোন বিষয়েই এমন উদাহরন পাওয়া যাবে।
আর ইংরেজী শিখলে পড়াশুনা করতে বাইরে না যেতে চাইলে দেশেও চাকরীতে সুবিধা। কারন অধিকাংশ কোরেসপোন্ডেস হয় ইংরেজীতে। কারন ব্যাবসা এই ভাষাতেই বেশি। বলতে পারেন চায়না থেকেও এখন অনেক ব্যাবসা হয়, কিন্তু তাদের আন্তর্জাতিক সাইটে ঢু মারেন .. ইংরেজী।
ইংরেজী আন্তর্জাতিক ভাষা... এটা তো সত্যি !
একটু পেছনে ফিরে তাকাই। এটি কোন জাতিগত বিদ্বেশপ্রসূত বক্তব্য নয়। ব্রিটিশদেরপ্রতি প্রতিবাদ জানানোর জন্য এই উপমহাদেশের মুসলিমরা একসময় ইংরেজী বর্জন করে। তার ফলাফল আমরা পড়েছি, মুসলিম রা সর্বক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছিল। বিজ্ঞান, চাকরী ও ব্যবসায়। এটা যে ভুল ছিল তা বুঝতে পারেন সম্ভবত স্যার সৈয়দ আহসানউল্লাহ (নাম টা ঠিক মনে পড়ছে না
), তারপর তিনি আলিগড় মুভমেন্ট শুরু করেন যার কারনেই বলতে গেলে মুসলিমরা পরে ইংরেজী শিক্ষা আবার শুরু করে।
এতো একটা সম্প্রদায়ের কাহিনী কেবল, কিন্তু আমি বলতে চাইছি ইতিহাসের শিক্ষাটা। আমরা একটি দেশ হিসাবে এখান থেকে শিক্ষাটা নিতে কি পারি না?
এটাও ঠিক, আমি মনে করি ইংলিশ মিডিয়াম নজরদারি করা উচিৎ। আমার এক বন্ধুর ছোটভাই নামকরা এক ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে। সিলেবাস ও বই ভারতীয়। আমি অবাক হলাম তার সাথে কথা বলে যে সে ভারতে ভূপ্রকৃতি জানে অথচ বাংলাদেশের জানে না। ভারতের ইতিহাস ঠোটস্থ, কিন্তু আমাদের টা না!! এটার পরিবর্তন হওয়া দরকার যদি এখনও না হয়ে থাকে।
“All our dreams can come true if we have the courage to pursue them.” - Walt Disney
http://www.amanpages.com/