টপিকঃ ভাষা বিষয়ক কচকচি...
প্রথমে একটা ছোট বাস্তব অভিজ্ঞতা বলিঃ
অনেক দিন আগে (স্কুল/কলেজ লাইফে) আমি একবার একা দাদা বাড়ী গেলাম। গ্রামের অন্য এক বাসাতে দেখা করতে গিয়েছি। পরিচিতা এক বয়ষ্কা মহিলা বললেন "তোমরা কোনবেলা আসলেন বাহে?"
আমি গিয়েছিলাম একা। তাই মনে মনে বললাম একা আসছি ... আমার ভাষা উনি বুঝবেন কি না জানিনা। তাই জোরে বললাম, "কাইল আসছি" (গতকাল এসেছি)। এরপর উনি জিজ্ঞেস করলেন, "বাসাত্ তোমরাগুলা কেমন আছেন?"
শুনামাত্র বিদ্যূৎ চমকের মত বুঝতে পারলাম যে, আমার এলাকার আঞ্চলিক ভাষাতে তোমরা হল একবচন (=তুমি, আপনি), আর, তোমরাগুলা হল বহুবচন (=তোমরা, আপনারা)।
গল্পটা বলার উদ্দেশ্য হল, আঞ্চলিক বা কথ্য ভাষার ব্যাপারটা তুলে আনা। এই কথ্য ভাষাগুলো ভাষার অংশ। কাজেই এগুলোকে ভুল বলা নিজের স্বল্পজ্ঞানের পরিচায়ক।
বানান ভুল আর কথার ভুল এক জিনিস নয়।
ফাইস্যা গেছি .... এটা ঢাকার কথ্য ভাষা। কোন ব্যাকরণ বইয়ে এটা পাওয়া না গেলে সেটা ব্যাকরণবিদগণের ব্যর্থতা, ভাষার নয়।
ভাষা একটি চলমান বিষয়। তা না হলে ৫০ বছর আগের ভাষা আর বর্তমান ভাষা একই রকম হত। ব্যাকরণের কাজ হল সেই সময়ের ভাষাকে বুঝার সুবিধার্থে একটা নিয়ম খুঁজে বের করা। মানুষের মুখের ভাষাগুলো বিশ্লেষন করে ব্যাকরণবিদগণ ভাষাটির নিয়মগুলো বের করে নিয়ে আসেন। তার পরেও দেখা যায় কিছু ভাষাকে এই নিয়মের মধ্যে ফেলা যাচ্ছে না ... তখন এগুলোকে ব্যতিক্রম বলে চালিয়ে দেন।
- আরও সংক্ষেপে বললে, ভাষা ব্যাকরণকে অনুকরণ করে না, বরং ব্যাকরণই ভাষাকে অনুসরণ করে।
যারা ভাষা নিয়ে, খুব কাঁদা ছোড়াছুড়ি করছেন, তাঁরা কি কথাগুলো কখনো ভেবে দেখেছেন?
-----------------------------------
আমার সমস্যা হল, আমি সকলকে বুদ্ধিমান ভাবি। তাই, "আক্কেলমান্দকে লিয়ে ইশারাই কাফি" ... এই প্রবাদবাক্য মেনে শুধু ইশারা করি। যারা ব্যাক্কল তাঁরা বুঝবে না, সেটা যত সোজাসুজিই বলা হোক না কেন ......